Wellcome to National Portal

প্রানবন্ত সবকিছুই পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল-কুরআন (২১ঃ৩০)

মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

গত এক দশকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ঈর্ষনীয় সাফল্য বাংলাদেশকে আরো বেশি উন্নত লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। সরকারের ভিশন-২০২১ এর বাস্তবায়ন অভিযাত্রায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং ২০২৩ সাল নাগাদ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। সরকারের রূপকল্প-২০৪১ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন করার রোডম্যাপ সরকার গ্রহণ করেছে। ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি কারণে পানি সম্পদের সুষ্ঠু, টেকসই এবং সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ছাড়া দেশের ‍উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘ ঘোষিত Sustainable Development Goals (SDGs) এর ৩টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লীড, ১টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কো-লীড এবং ২০টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসোসিয়েট হিসেবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব পালন করছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি অর্থনীতির বিভিন্ন খাতসহ জাতীয় পর্যায়ের অভীষ্ট ও লক্ষ্য অর্জনে প্রধান বাঁধা ও অনিশ্চয়তা বিধায় কাঙ্খিত উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার “বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০”নামে বাংলাদেশের প্রথম শতবর্ষী মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মহাপরিকল্পনাটির প্রায় ৮০% বাস্তবায়নের গুরু দায়িত্ব পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় হতে অর্পিত এবং সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২টি প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলার প্রত্যেক উপজেলায় এবং সকল সিটি কর্পোরেশন ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন করার প্রকল্প পর্যায় ভিত্তিতে গ্রহণ করে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। নদী সিস্টেমভিত্তিক ড্রেজিং এর জন্য প্রকল্প  হাতে নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবে নদী সিস্টেমের বেসিনভিত্তিক সমীক্ষা সম্পাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলভূক্ত পাহাড়ী ও হাওর এলাকায় নদীসমূহের পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভাঙ্গন প্রবন স্থানসমূহে প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়নের নিমিত্ত হাইড্রোলজিকেল অঞ্চল ভিত্তিক/নদী ভিত্তিক মনু, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহন করা হচ্ছে। সমীক্ষাসমূহ সম্পাদিত হলে পানি সম্পদের সমন্বিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হবে। দেশব্যাপী নদীসমূহ ড্রেজিং করে নাব্যতা নিশ্চিতকল্পে ড্রেজিং মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। ড্রেজিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ড্রেজার ক্রয় করা হচ্ছে। বড় নদীসমূহ চ্যানেলাইজেশন এবং সমূদ্র উপকূলে ভূমি পুনরুদ্ধারে প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় উপকূলীয় পোল্ডারসমূহ পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসন এবং শক্তিশালীকরণ করা হচ্ছে। বাঁধ ও খালের নিকটবর্তী জায়গায় বনায়ন করার প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। পুরাতন সেচ প্রকল্পসমূহের পুনর্বাসন, আধুনিকায়ন ও কমান্ড এরিয়া সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশব্যাপী নদী ভাঙ্গনের অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে নদী ভাঙ্গন কবলিত জনপদ, জেলা-উপজেলা শহর, স্থানীয় হাট-বাজার, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, ঐতিহাসিক গুরুত্ববহনকারী স্থান, কৃষি জমি, সীমান্ত এলাকায় দেশের ভূ-খন্ড প্রভৃতি রক্ষার্থে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হবে।


বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রধানতম নদী সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই ইত্যাদি নদী সমূহ নদী ভাঙ্গন, নদীর তীর ধ্বস ও নদীর বুকে বালুচর সৃষ্টি হয়ে নদী মৃতপ্রায় হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমনঃ- অসময়ে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আগাম বন্যা ও খরাপ্রবনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারনে সমগ্র সিলেট অঞ্চলের পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী ও টেকসই সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের রূপকল্প-২০২১ এবং অভিলক্ষ্য-২০৪১ বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে পানি সম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।

এ অঞ্চলে পানি সম্পদ খাতে প্রধান সমস্যাসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো নদী ভাঙ্গন, নদী তীর ধ্বস ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট আগাম বন্যায় হাওরের ফসল হানী। বিধায় অত্র জোনের আওতায় ইতিমধ্যেই নদী ভাঙ্গন রোধে এবং নদীতে সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত চর অপসারণ  নদী তীর সংরক্ষণ ও নদী ড্রেজিং কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রনয়নের উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিঘাত মোকাবেলায় সহনশীল করে গড়ে তোলা ও কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ইতোপূর্বে সমাপ্তকৃত প্রকল্পের অংগসমূহের পূনর্বাসন/ অভিযোজন কাজ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সিলেট জেলা অংশে ড্রেজিং কাজের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, নদীর পানি ধারন ও প্রবাহ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং সর্বোপরি নদী সমূহ যাতে এক-একটি প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে ভূ-গর্ভস্থ এ্যাকুইফারসমূহে পানি রিচার্জের মাধ্যমে সুপেয় পানির স্তরের ভারসাম্যাবস্থা বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা শহরসহ মনু বেসিন এলাকায় আকষ্মিক বন্যার (Flash Flood) প্রকোপ হ্রাস, নদী তীরের ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মনু বেসিন উন্নয়ন প্রকল্প এবং হবিগঞ্জ জেলা শহরের দীর্ঘ মেয়াদে বন্যা ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন সহ খোয়াই বেসিন এলাকায় আকষ্মিক বন্যার (Flash Flood) প্রকোপ হ্রাস , নদী তীরের ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে খোয়াই রিভার সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলাসহ হাওরাঞ্চলে বোরো ফসল রক্ষার জন্য আগাম বন্যার প্রকোপ হ্রাসকল্পে নদী ও খাল সমূহের ড্রেজিং ও খনন কাজ বাস্তবায়ন এবং বিভিন্ন হাওরে প্রবেশের জন্য খালের মুখে ও পাবরিক-কাট স্থানসমূহে কজ-ওয়ে নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।